গবেষণা প্রতিবেদন কাকে বলে? গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়নে বিবেচ্য বিষয়গুলো আলোচনা কর।

গবেষণা প্রতিবেদন কাকে বলে? গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়নে বিবেচ্য বিষয়গুলো আলোচনা কর।

গবেষণা প্রতিবেদন কাকে বলে? গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়নে বিবেচ্য বিষয়গুলো আলোচনা কর।

ভূমিকা: সাধারণত গবেষণা হলো কোন কিছু খোঁজা বা অনুসন্ধান করা। আর গবেষণার একটি মুখ্য বিষয় হলো গবেষণা প্রতিবেদন। গবেষণা করতে হলে এর প্রতিবেদন অত্যন্ত জরুরি। যেকোন গবেষণামূলক প্রতিবেদনের মুখ্য উদ্দেশ্য হলে। অনুসন্ধানমূলক সমস্যাকে যুক্তিমূলক প্রেক্ষাপটে প্রকাশ করা। সংগৃহীত উপাত্তের মুক্তিল্যাখ্যা প্রদান করা এবং ফলাফল গ্রহনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।

গবেষণা প্রতিবেদন কাকে বলে গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়নে বিবেচ্য বিষয়গুলো আলোচনা কর।

যেকোন বিষয়ে গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো নতুন জানের আদান প্রদান। আর এসকল নতুন জ্ঞানের জন্য প্রয়োজন গবেষণা প্রতিবেদন লিখন। গবেষণাকে অতি সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য গবেষণা প্রতিবেদন অত্যন্ত একটি কার্যকরী প্রতায়।

গবেষণা প্রতিবেদন: সাধারণত গবেষণা প্রতিবেদন বলতে গবেষনার চূড়ান্ত ফল লাভকে যোঝায় যা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের সাথে শেষ হয়। অন্যভাবে বলা যায়, গবেংগ ও সামঞ্জস্য বিবরণ। অর্থাৎ, গবেষণা প্রতিবেদন হালা গবেষণার সর্বশেষ ধাণ বা পর্যায়।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা: আবু তাহের এর মতে, 'প্রণালিবদ্ধ উপায়ে ফোন অনুসন্ধান কর্মের প্রাপ্ত ফলাফলের যৌক্তিক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বিস্তারিত বিবরণই হচ্ছে গবেষণা প্রতিবেদন।

M. N. Aminuzzaman এর মতে, "যে কোন বিবরণ অনুসন্ধানের, ফলাফলের নিয়মতান্ত্রিক বিবৃতি হল্যে গবেষণা প্রতিবেদন, যা কিছু লোক কর্তৃক প্রণীত সুনিনিই ও সুনিয়ন্ত্রিত তথ্যাবলির উপর প্রতিষ্ঠিত।"

শুড এন্ড হাট এর মতে, "গবেষণা প্রতিবেদন হচ্ছে গবেষণার সর্বশেষ ধাণ এবং এর লক্ষ্য হচ্ছে যারা গবেষণার পরিপূর্ণ ফলাফল এবং সিদ্ধান্তসমূহ জানতে বিশেষ অআই তাদের কাছে এগুলো ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা যাতে আয় এগুলো অধ্যয় করে জাত হতে পারে।"

সুতরাং, গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফল জানা এবং ব্যবহৃত পদ্ধতি, উপকরণ, সমস্যা, সুপারিশ ইত্যাদি জানতে গবেষকরে প্রতিটি কাজের পর্যালোচনামূলক যে প্রতিবেদন তৈরি করতে হয় তাকে গবেষণা বলে। অর্থাৎ, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে সর্বোপরি অনুসন্ধানের পর সংগৃহীত তথ্যাবলির সংক্ষিত উপস্থাপনই হলো গবেষণা প্রতিবেদন।

গবেষণা প্রতিবেদন বিবেচ্য বিষয় বা উপাদান: যেকোন গবেষণা করতে গেলে অবশ্যই এয় প্রতিবেদনের কথা চিন্তা করতে হবে। তা না হলে গবেষণায় উদ্দেশ্য সফল হবে না। প্রত্যেকটি গবেষণার সফলতা ও ব্যর্থতা মূলত গবেষনা প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করে। নিম্নে গবেষণা প্রতিবেদনেয় বিবেচ্য বিষয় বা উপাদানগুলো আলোচনা করা হলো।

১. কাঠামো: যে কোন গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে গেলে সর্ব প্রথম এর সুনির্দিষ্ট কাঠামোর কথা চিন্তা করতে হবে। তবে প্রতিবেদনের কোন নির্দিষ্ট কাঠামো নেই। কিন্তু এটাই প্রতীয়মান যে গবেষণা প্রতিবেদনের জন্য সুনির্দিষ্ট কাঠামো সরকার। তা না হলে গবেষণা কাজটি পরিপূর্ণতা পাবে না।

২. পরিকল্পনা প্রণয়ন: প্রত্যেকটি গবেষণা প্রতিবেদনের। জন্য পরিকল্পনা প্রয়োজন। পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হালা গবেষণা প্রতিবেদন সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা থাকতে হবে। যে কোন গবেষণা প্রতিবেদন এর জন্য তাই পরিকল্পনা প্রণয়ন একটি অন্যতম বিবেচ্য বিষয় বা উপাদান।

৩. স্পষ্ট বক্তব্য: যে কোন গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে হলে অবশ্যই সে প্রতিবেদনের ভাষা সুস্পষ্ট হতে হবে। অর্থাৎ, গবেষককে প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে হলে তাকে অবশ্যই সুস্পষ্ট ভাষা বা বক্তরা ব্যবহার করতে হবে। গবেষণা প্রতিবেদনের ভাষ। যদি স্পষ্ট হয় তার সহজেই অনেকে বিষয়টি পরিপূর্ণভাবে বুঝতে পারবে।

৪. শিরোনাম: শাবষণা প্রতিবেদনের আর একটি অন্যতম বিবেচ্য বিষয় হলো শিরোনাম। প্রতিবেদন প্রণয়নের সময় অবশ্যই শিরোনামের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে কয়ে তা সঠিক ও স্পষ্ট হয়। কেননা, সঠিক শিরোনামের মাধ্যমে গবেষণার বিষয়টি অনেকে অনুমান করতে পারবে।

৫. বাস্তবতা ও নির্ভরতা: গাবষণা প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে গেলে বাস্তবতার কথাটিও বিবেচনা করাত হযে। যখন গবেষক প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করবে তখন তাকে অবশ্যই ভারতে হবে যে গবেষণাটি বাস্তবতার সাথে কতটুকু সম্পৃক্ত। কেননা, যদি গাবষণাটি বাস্তবতার সাথে সম্পৃক্ত না হয় তবে প্রতিবেদনটি গ্রহণযোগ্য হবে না। এতে কোন সন্দেহ নাই।

৬. উপযুক্ত ভাষা: এটি গবেষণা প্রতিবেদনের আর একটি অন্যতম বিবেচ্য বিষয়। গবেষক যখন একটি প্রতিবেদন তৈরি করবেন, তখন তাকে ঐ গবেষণা প্রতিবেদনটিতে উপযুক্ত এবং সহজ সরল ভাষা ব্যবহার করতে হবে। উপযুক্ত ভাষা ব্যবহার ব্যতীত গবেষণা প্রতিবেদনটি স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে না।

৭. নির্দিষ্ট সময়: গবেষণা প্রতিবেদনের আর একটি বিবেচ। বিষয় হালা এতে নির্দিষ্ট সময় উপস্থাপন করা। গবেষণা প্রতিবেদনে একজন গবেষকরে অবশ্যই সময়ের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

৮. আকর্ষণীয় উপস্থাপন: এটি আর একটি অন্যতম বিবেচা বিষয়। প্রতিবেদনে গ্রাফ, লেখচিত্র টেবিল সারণি এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে যাতে গবেষণা প্রতিবেদনটি দেখতে আকর্ষনীয় দেখায়।

৯. সংক্ষিপ্ত সারমর্ম: গবেষণা প্রতিবেদনের আর একটি বিবেচা বিষয় এটি। অনেক সময় পাঠকের পক্ষে পুরো গবেষণাটি পড়া সম্ভব হয় না, সে ক্ষেত্রে গবেষণা প্রতিবেদনের জন্য একটি সংক্ষিপ্ত সারমর্ম দিতে হবে। যাতে করে প্রতিবেদনটি সবাই পড়তে পারে।

১০. স্পষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: গবেষণা প্রতিবেদনটির মূল লক্ষ। ও উদ্দেশ্য কি সে সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা থাকতে হবে। অর্থাৎ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিবেচনা করতে হবে। প্রতিবেদন প্রণয়ন করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে কোন উদ্দেশ্যে প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করা হচ্ছে। তবেই প্রতিবেদনটি সফলতা লাভ করবে।

১১. ব্যাকরণগত স্পষ্টতা: গবেষণা প্রতিবেদনের আর এফটি বিবেচ্য বিষয় বা উপাদান এটি। যখন গবেষক প্রতিবেদন প্রণয়ন করবেন তখন তাকে দেখতে হবে তার প্রতিবেদনটি ব্যাকরণগত শুদ্ধ আছে কি না। তা না হলে গবেষণা প্রতিবেদনটি গ্রহণযোগ্য হবে না।

১২. সুপারিশমালা: প্রত্যেকটি গবেষণা প্রতিবেদন সম্পন্ন করতে হলে এতে কিছু সুপারিশ প্রদান করতে হয়। তাই গবেষককে অবশ্যই গবেষণা প্রতিবেদনের জন্য কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ প্রদান করতে হবে। কেননা, সুপারিশ প্রদান না করলে অনেকে সঠিকভাবে বুঝতে পারবে না। তাই এটি একটি অন্যতম বিবেচ্য বিষয়।

 ১৩. সীমাবদ্ধতা: গবেষককে অবশ্যই প্রতিবেদনে যে সকল সীমাবদ্ধতা আছে তা উল্লেখ করতে হরে। যদি সীমাবদ্ধতাগুলো ভালোভাবে উল্লেখ না করে তবে তা পাঠকের কাছে রহস্যজনক মনে হবে। তাই এই বিষয়টিও বিবেচনা করতে হবে।

উপসংহার: উপায়াক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে যলা যায় যে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে হলে একজন গবেষককে অবশ্যই উল্লিখিত বিষয়গুলো পরিপূর্ণভাবে বিবেচনা করতে হবে। কেননা, গবেষণ্য প্রতিবেদন হলো গবেষণার সর্বশেষ দাপ। একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে গবেষক ও পাঠকের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়। কেননা, গবেষণা প্রতিবেদনই যদি না থাকে তবে পাঠক কিভাবে বুঝবে যে গবেষণা কার্য সম্পন্ন করতে হবে।

সুতরাং, সর্বশেষে বলা যায় যে, একটি প্রতিবেদন এর জন্য উপরিউক্ত বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post